(এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম ) : সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন ও বিয়ানীবাজার পৌরসভার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিয়ানীবাজার পৌরসভায় ইভিএম- ভোটগ্রহণ চলবে। এছাড়া গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলবে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
বুধবার (১৫ জুন) জেলার ১১২টি ভোটকেন্দ্রে পৃথক পৃথক সময়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
জানা যায়, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুইজন প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম ও ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া অপরপ্রার্থী হলেন ঢাকাদক্ষিণ কলেজের সাবেক ভিপি ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা শফিক উদ্দিন।
এ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৪০ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ২২ হাজার জন নারী এবং ১ লাখ ১৮ হাজার ৩ জন পুরুষ। তারা মোট ১০২টি কেন্দ্রে ৬২৫টি কক্ষে ভোট দিয়ে নিজেদের কাঙ্ক্ষিত জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন। ১০২টি ভোট কেন্দ্রে মধ্যে ৯৩টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা ব্যালেটের মাধ্যমে আগামীর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শুকুর মাহমুদ মিঞা বলেন, ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের জন্য আমাদের সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।
এদিকে জেলার বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে ৬৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদে ১০ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৮ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রবাসী অধ্যুসিত এ পৌরসভায় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
এখানে মোট ২৭ হাজার ৭৯০ জন ভোটার ১০টি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে ৯টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন এ পৌরসভার ১৩ হাজার ৮৭০ জন পুরুষ ও ১৩ হাজার ৯২০ জন নারী ভোটার।
মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র আব্দুস শুকুর (নৌকা), আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী আহবাবুর রহমান সাজু (কম্পিউটার), আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী ফারুকুল হক (চামচ) ও আব্দুল কুদ্দুছ টিটু (হেলমেট), স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রভাষক আব্দুস সামাদ আজাদ (হ্যাঙ্গার), মোহাম্মদ অজি উদ্দিন (নারিকেল গাছ) মোহাম্মদ আব্দুস সবুর (মোবাইল ফোন), সাবেক পৌর প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন (জগ), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. সুনাম উদ্দিন (লাঙল) এবং বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আবুল কাশেম (কাস্তে)।
এখানে চর্তুমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন- নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান মেয়র আবদুস শুকুর, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফারুকুল হক, সাবেক পৌর প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবদুস ছবুর। এই চারপ্রার্থীর মধ্যে যেকেউ মেয়র হবেন।
বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন বলেন, ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে আমরা তৎপর রয়েছি। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ নির্বাচন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
একপ্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। প্রতিটি কক্ষে থাকবে একটি করে ইভিএম মেশিন। তবে ৮০টির স্থলে ১২০টি ইভিএম মেশিন সরবরাহ রাখা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে বাড়তি মেশিন দেওয়া হবে, যাতে বিড়ম্বনায় পড়তে না হয়। এছাড়া কারিগরি ত্রুটি সারাতে ৩টি টিম নির্বাচনী মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। আর প্রতিটি কেন্দ্রে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
সিলেট জেলার এ দুটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফুর রহমান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ৪ স্তরের নিরাপত্তা বলয় জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া র্যাব, বিজিবির সদস্যরাও তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করবে বলেও তিনি জানান।